Tuesday, April 7, 2020

প্রিমো আর এক্স৭ মিনি (Primo RX7 Mini) : কি আসলেই কিলার স্মার্টফোন?

প্রিমো আর এক্স৭ মিনি (Primo RX7 Mini) : কি আসলেই কিলার স্মার্টফোন?

২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে পুরো দেশের বাজেট স্মার্টফোন বাজারে যে সত্ত্বাটি এক শক্ত অবস্থান তৈরি করে তার নাম ওয়ালটন প্রিমো আরএক্স৭ মিনি। সে সময় প্রথম এক মাস ৭,৭৯৯ টাকায় ফ্ল্যাশ সেলে বিক্রি হলেও পরবর্তীতে স্মার্টফোনটির রেগুলার দাম হয় ৮,৭৯৯ টাকা। পরবর্তীতে দাম হয় ৮,৯৯৯ টাকা এবং বর্তমানে করোনা প্রভাবে এর দাম গিয়ে ঠেকেছে ৯,৪৯৯ টাকায়! অন্য সবার মত আমারও স্মার্টফোনটি কেনার জন্য একটা তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল। ওয়ালটনের এই প্রথম ফোন যা কেনার প্রতি আমার তীব্র ইচ্ছা জন্মায়, যদিও আমাকে আগেও ওয়ালটনের স্মার্টফোন ব্যবহার করতে হয়েছে, তবে তা অনেকটা ঠ্যালায় পরে!


যাই হোক, আমি স্মার্টফোনটি কিনলাম এমন এক ক্রান্তিপূর্ণ সময়ে যখন চীনে পুরোপুরিভাবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলছে। আমি প্রিমো আরএক্স৭ মিনি কিনেছি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি, আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সময় করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সকল ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতির দাম হুহু করে সবজায়গায় বেড়ে যাচ্ছিল। সেই দাম বেড়ে যাওয়ার ছোঁয়া লাগে এই আর এক্স ৭ মিনি'তেও। আমাকে ৫০০ টাকা বেশি ঢেলে ৯,৪৯৯ টাকা দিয়ে এই ফোন ঘরে তুলতে হয়। যখন কোন কিছু কেনার ইচ্ছা সত্যি সত্যি লাগে, তখন সেই বেড়া আটকানো যায় না।

যাই হোক, আমি ৮,৯৯৯ টাকার সাপেক্ষেই স্মার্টফোনটিকে তুলনা করব, কেননা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওয়ালটন আবার এই দামটি ৯৪৯৯ থেকে ৮৯৯৯ করবে আমার বিশ্বাস, যদি স্টক থাকে! আসল কথায় আসি, স্মার্টফোনটি প্রথমদিন হাতে নিয়ে কোনভাবেই একেক সস্তা কোন স্মার্টফোন মনে হচ্ছিল না। এমনকি মিডরেঞ্জের বিভিন্ন ভালোমানের স্মার্টফোনের ডিজাইনের সাথেও এই আরএক্স৭ মিনি  এর ডিজাইন এর তুলনা করা যায়, খুব দারুন ভাবে। যেখানে ২৪ হাজার টাকার স্যমসাং এম৪০ স্মার্টফোনও প্লাস্টিক বিল্ডে তৈরি, সেখানে এই ৮৯৯৯ টাকার প্রিমো আরএক্স৭ মিনিতে সামনে পেছনে পাবেন গরিলা গ্লাস। গরিলা গ্লাস শুনে এর অপর হাতুড়ি চালানোর স্বপ্ন দেখবেননা; গরিলা গ্লাস স্ক্রাচ প্রুফ, ভাঙাভাঙ্গি প্রুফ না। তাই হাত থেকে পরলে খবর হয়ে যাবে।
ছবিতে দাগ নিজ দায়িত্বে ইগ্নোর করুন


তো যদি আসে ভাঙ্গাভাঙ্গির কথায়, এই স্মার্টফোনটি হাত থেকে পরে গেলে ক্ষতি হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকেই স্বাভাবিক, কেননা এটি গ্লাস বডি। তবে তাদের জন্য আশার আলো প্রিমো আরএক্স৭ মিনি নকিয়া ৫.১ প্লাস এর রিব্রান্ডিং। নকিয়া ৫.১ প্লাসে ছিল এন্ড্রয়েড ওয়ান, আর এতে এন্ড্রয়েড ওয়ান এর বদলে, ওয়ালটনের ইচ্ছায় আপডেট নির্ভরশীল স্টক এন্ড্রয়েড ৯ পাই এডিশন। তাই বডিতে কোনরকম ক্ষতি হলে এর গ্লাস বা অন্যযেকোনো পার্টস মার্কেটে এভেইলেবল পাবেন।  ধরুন আপনার পেছনের গ্লাস প্যানেল ভেঙ্গে গেলে, আপনি নকিয়া ৫.১ এর গ্লাস প্যানেল মার্কেট থেকে খুঁজে নিয়ে লাগাতে পারবেন। যদিও ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারে গেলে যে পাবেননা এমনটা না। যারা সুন্দর সুন্দর স্মার্টফোনগুলোকে মোটা মোটা কভার লাগিয়ে অসুন্দর বানাতে এক্সপার্ট; তাদের জন্যও এটি সুখবর। নকিয়া ৫.১ প্লাসের শত শত ডিজাইনের বিভিন্ন কভার মার্কেটে অলরেডি পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া বক্সে একটি ফ্রি সিলিকন কভার তো পাচ্ছেনই।

সফটওয়্যারের দিকে আসি, আগেই বলেছি স্মার্টফোনটিতে এন্ড্রয়েড স্টক ৯ পাই ব্যবহার করা হয়েছে। পরীক্ষা করার জন্য পাব্জি এর মত গেমস খেলেছি, তাতে হালকা ল্যাগট্যাগ ছাড়া বেশি কিছু পাইনি, যা সহনীয়। যেখানে স্মার্টফোনটির র‍্যাম ৩ জিবি এবং প্রসেসর হেলিও পি৬০ এই স্মার্টফোনে যেকোনো অ্যাপলিকেশনে স্পিড ভালো পাওয়া যায় ঠিক আছে, তবে র‍্যাম ম্যানেজমেন্ট খুবই খারাপ।
মাল্টি টাস্কিং সেই জন্য এই স্মার্টফোনে বর্তমানে প্রায় অপ্রতুল হয়ে পড়েছে।

 আমি জানি এটা হার্ডওয়্যারের কোন ইস্যু না এটা সফটওয়্যার জনিত ইস্যু। ওয়ালটন এই সমস্যা নিরোধনে জানুয়ারি থেকে একটি সফটওয়্যার আপডেট সব ফোনে দিলেও সেই আপডেটে কিছুদিন র‍্যাম ম্যানেজমেন্ট ভালো থাকেলেও তারপর থেকে যে লাউ সেই কদু অবস্থা। আমার এই স্মার্টফোনের সবচেয়ে বড় সমস্যা লেগেছে এই অভ্যন্তরীণ সফটওয়্যারের দিকে। যেমন আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, কোন কল আসলে আপনি রিসিভ করলেও, পরবর্তীতে সেই কলটি আপনাকে নোটিফিকেশন বারে মিসড কল দেখাবে। 

তাছাড়া ক্যামেরা, ব্যাটারি ব্যাকআপের দিক দিয়ে স্মার্টফোনটি মোটামোটি ভালো। ক্যামেরা ইউআইএ আরো এক্সট্রা কিছু ফিচার দেয়া যেতো, তবে যা আছে তা যথেষ্ট।
Walton Primo G9: আসলেই সিম্পলি বেস্ট?

Walton Primo G9: আসলেই সিম্পলি বেস্ট?

Walton Primo G9 ফোনটা সিম্পলি বেস্ট! না, এটা আমার কথা না, ওয়ালটন নিজেই বলেছে। তো, চলুন দেখি ফোনটি আসলেই সিম্পলি বেস্ট কিনা। ফোনটির দাম আগে জানিয়ে রাখি, ৫,৯৯৯ টাকা।
শুরু করছি ডিজাইন দিয়ে। এর গ্রাডিয়েন্ট কালারগুলো আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। ওয়ালটন দাম অনুযায়ী তাদের ফোনের ডিজাইন কিন্তু বেশ ভালোই করে আমি বলবো। তবে রেয়ারে একটিমাত্র ক্যামেরাকে স্থান দিতে তিনটি ক্যামেরা রাখার মত বিশাল জায়গা দখলের চেয়ে ছোট্ট একটা সার্কেলে ক্যামেরা রাখলে সৌন্দর্য অনেকটা বেড়ে যেত বোধ করি।

সামনের দিকে রয়েছে 5.45" একটি ডিসপ্লে। না, এটি কোন নচ ডিসপ্লে না। এর রেজ্যুলেশন HD+। PPI তারা উল্লেখ করেনি, তবে 295 হওয়ার কথা।
এই বাজেটে তারা 4G দিয়েছে। দিয়েছে 2GB DDR4 র‌্যাম। আরো দিয়েছে Unisoc SC9863A চিপসেট। এই বাজেটে বেশ ভালো পারফর্মেন্স দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই ফোন। মূলত র‌্যাম ও চিপসেট এই ফোনের কিলার পয়েন্ট।
তবে, এদিকে বেশি দেওয়ার সাথে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে থাকছে ফেস আনলক। ফেস আনলক সিস্টেম একটু বিশেষ ধরণের। তারা বলছে লাইভনেস ফেস আনলক। চোখেন পলক না ফেললে আনলক হবে না। কিন্তু যাই হোক, দিনশেষে এটা একটা সফটওয়্যার বেজড ফেস আনলক, যা আসলে ফিঙ্গারপ্রিন্টের বিকল্প অবশ্যই না।
পাশাপাশি ব্যাটারী থাকছে মাত্র 2500 mAh। এখানে তারা AI Power Saving ফিচারের কথা বলেছে। বাট যা খুশি থাক, এটা অবশ্যই খুবই কম।
ক্যামেরা দুদিকেই থাকছে 8MP এর একটি করে ক্যামেরা। রেয়ার ক্যামেরা অটোফোকাস সমর্থন করে। সামনেরটি BSI ক্যামেরা।
ফোনটি এই দামে যেমনটা এক্সপেক্টেড, অবশ্যই প্লাস্টিক বিল্ড। তিনটি গ্র্যাডিয়েন্ট কালারে পাওয়া যাবে নীল, লাল আর বেগুনি (পার্পল বললে স্মার্ট লাগে, তাই না?)। অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন থাকছে 9.0 Pie। সেন্সর শুধু একসেলেরোমিটার আর প্রক্সিমিটি। অবশ্য এই দামে এটা নিয়ে অভিযোগ নেই।
সবশেষে, এটা দাম হিসেবে বেশ ভালো। তবে আমি সিমপ্লি বেস্ট বলতে পারছি না। আমি কিন্তু খারাপ বলছব না। ফোনটি অবশ্যই বেশ ভালো, বিশেষ করে পারফরম্যান্স সেকশনে। যাদের প্রথম প্রায়োরিটি পারফর্ম্যান্স, কিন্তু বাজেট কম, তাদের জন্য বেশ উপযুক্ত।
অন্যদিকে, যাদের বড় ডিসপ্লে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, বড় ব্যাটারী বেশি প্রয়োজন, তারা Symphony i30 দেখতে পারেন। সাথে ৫০০ টাকা দামও কম আছে। অবশ্য এজন্য পারফরম্যান্সে বড় ধরণের কম্প্রোমাইজ করতে হবে, হারাতে হবে 4G সুবিধাও।
অন্যদিকে, Itel Vision 1 এ কোন ফিচার হারাতে হচ্ছে না। বোনাস পাবেন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, বড় ব্যাটারী ও বড় ডিসপ্লে। তবে একদম কিছুই হারাতে হবে না তা নয়, পকেটে থেকে হারিয়ে যাবে এর সাথে আরো ১,০০০ টাকা বেশি।
Symphony Z15: ভালোই তো!

Symphony Z15: ভালোই তো!

Z সিরিজ সিম্ফনির ফ্ল্যাগশিপ সিরিজ। মাঝখানে তারা দীর্ঘদিন এই সিরিজে কোন ফোন আনেনি। দীর্ঘ বিরতির পর 'Z is back!' ট্যাগসহ ফোনটি তারা নিয়ে আসে। এরপর Z সিরিজে আরো চারটি ফোন তারা আনে। তবে সেগুলো কয়েকটি দিক নিয়ে কমবেশি সমালোচিত হয়েছে। তবে এই ফোনটি নিয়ে রিভিউয়ার এবং ব্যবহারকারীদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
এই ফোনটি সিম্ফনির প্রথম নচযুক্ত ফোন। এখানে থাকছে 6.09” বড় ডিসপ্লে, 1.6 GHz Octa Core প্রসেসর, 4000 mAh বড় ব্যাটারি ,চমৎকার লুক আর সবকিছু একটা বেশ ভালো দামে। বর্তমানে ফোনটির নির্ধারিত মূল্য ৮,৪৯০ টাকা।

ডিজাইন 

Z15 এর ডিজাইন এর রিলিজের সময়ে বড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। Z50 এর ডিজাইনও প্রায় একইরকম, তবে সেটি আমি অপছন্দ করেছি, কেননা এই সময়ে এবং Z50 এর দামে আরো ভালো কিছু এবং কিছু নতুনত্ব আশা করেছিলাম। তবে, Z15 এর ক্ষেত্রে এর ডিজাইনের আমি প্রশংসা করব।
এটার কয়েকটি কারণ আছে, Z50 এর কালার অপশনগুলো আমার ভালো লাগেনি। Z15 এর Cranberry Blue এর তুলনায় Z50 এর Cranberry Blue অনেকটা পার্পল ধরণের মনে হয়েছে। আর ক্যামেরা বাম্পসহ আরো কিছু কারণে Z15 আমার কাছে বেশি সুন্দর মনে হয়। তাছাড়া, Z15, Z50 থেকে প্রায় ৯ মাস আগে এসেছে এবং এটি নতুনত্ব এনেছে ডিজাইনে সেসময় অনুযায়ী। Z50 কোন নতুনত্ব আনেনি। আর দামেরও পার্থক্য আছে অনেকটা।


সম্ভবত দেশীয় ব্র্যান্ডের প্রথম ওয়াটারড্রপ নচযুক্ত ফোন এটিই। ছোট ও সুন্দর নচটি U শেপ। নচের সাথে সহনীয় বেজেল, তবে চিন এরিয়া কিছুটা বড়। ব্যাক সাইডে গ্র্যাডিয়েন্ট কালারিং করা হয়েছে, সিম্ফনির জন্য প্রথমবার। এবং গ্রাডিয়েন্ট কালারিংটা তারা আসলেই খুব সুন্দরভাবে করেছে।  দুটি কালার ভ্যারিয়েশনে এভিলেবল ফোনটি, ব্লাক+ক্যারিবিয়ান ব্লু ও ব্লাক+ক্যানবেরি রেড। ভার্টিকালি ক্যামেরা ও ফ্ল্যাশ যুক্ত করা হয়েছে। বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে আমার চোখে।  সব মিলিয়ে কোন দিক থেকেই এই দামে ফোনটির ডিজাইন নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকছে না। একদমই না!

ডিসপ্লে

এই ফোনে থাকছে 6.09″ IPS ডিসপ্লে। 19.5:9 অ্যাসপেক্ট রেশিওর ডিসপ্লেটির রেজ্যুলেশন 1560*720 অর্থাৎ, HD+। 282 PPI এর ডিসপ্লেটি এই বাজেটে যেমনটা আশা করা যায় তেমনই।

পারফর্মেন্স

এই ফোন রিলিজের সময় পর্যন্ত সিম্ফনির পক্ষ থেকে 1.5 GHz Quad Core প্রসেসরের বেশি কিছু আমরা পাইনি। তবে, অবশেষে কিছুটা আপগ্রেড করে এখানে তারা ব্যবহার করেছে Unisoc এর sc9863a মডেলের প্রসেসর যা একটি 28 nm 1.6 GHz ক্লক স্পিডসম্পন্ন অক্টাকোর প্রসেসর। এতে AI ক্ষমতা থাকছে। GPU থাকছে IMG 8322। AI প্রসেসর হওয়ায় ক্যামেরা সেকশনে এডভান্টেজ পাওয়া যাবে।  এর সাথে র‌্যাম থাকছে ২ জিবি DDR4 র‌্যাম। মোটামুটি ঠিকঠাকই বলব। তবে, গেমারদের জন্য অবশ্যই নয়।

স্টোরেজ

সিম্ফনি র‌্যাম ২ দিলেও এর সাথে রম ঠিকই ৩২ জিবি দিয়েছে। তাছাড়া দুটি ন্যানো সিমের সাথে ফোনটিতে ডেডিকেটেড SD Card স্লট থাকছে। তাই স্টোরেজ ১২৮ জিবি পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া যাবে।

ব্যাটারি

ফোনটিতে 4000mAh Li-Polymer ব্যাটারি সংযুক্ত রয়েছে, যেটি নন রিমুভেবল। তাছাড়া ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন HD+ হওয়ায় বেশ দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ পাওয়া যাবে। ডে টু ডে ইউজে এক চার্জে একদিনের বেশি চলে যাওয়ার কথা। স্ট্যান্ডবাই মোটামুটি ২৬৫ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ পাওয়া যাবে বলে সিম্ফনি ক্লেইম করছে। 

ক্যামেরা

এই ফোনের AI প্রসেসরের কারণে ছবি তোলায় এডভান্টেজ পাওয়া যাবে। ইমেজ প্রসেসিংয়ের জন্য এই ফোনের প্রসেসর বেশ ভালো। এই ক্যামেরায় ওয়েল ডিটেইলড উজ্জল প্রাণবন্ত ছবি তোলা যাওয়ার কথা। AI সিন ডিটেক্ট করে সে অনুযায়ী ছবি প্রসেস করতে সক্ষম।  রিয়ারে 13MP প্রাইমারী ক্যামেরার সাথে থাকছে 2MP ডেপথ সেন্সিং ক্যামেরা। ফলে পোর্টেট ছবি ভালো আসবে। ক্যামেরা দুটির অ্যাপার্চার যথাক্রমে f/2.0 ও f/2.4। তবে ফ্রন্ট ক্যামেরা মাত্র 5MP। এর অ্যাপার্চার f/1.9।  ক্যামেরাতে থাকছে Sony সেন্সর। ভিডিও ক্যাপচারের ক্ষেত্রে এই ফোনে সর্বোচ্চ 1080p 30fps পর্যন্ত রেকর্ডিং করা যাবে। টিম এটিসিসহ রিভিউয়ারদের প্রশংসা কুড়িয়েছে এর ক্যামেরা।

সিক্যুরিটি

ফোনটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিক্যুরিটি থাকছে। এর ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটি মাল্টি ফাংশনাল। অর্থাৎ, ফোন আনলকের পাশাপাশি এতে ছবি ক্যাপচার, ন্যাভিগেশন জাতীয় ফাংশন এরকম কিছু ফাংশন দেখা যাবে।  এটা ব্যবহারিক ক্ষেত্রে অনেক কাজে দেয়।  পাশাপাশি টিপিক্যাল ক্যামেরা বেজড ফেস আনলক থাকছে। 

অন্যান্য

ফোনটির বিল্ড ম্যাটেরিয়াল প্লাস্টিকই এক্সপেক্ট করব। ফোনটি অবশ্যই ফোরজি সমর্থিত। এতে অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন Android 9.0 Pie পেয়ে যাবেন। Fingerprint, Gravity(3D), Proximity ও Light Sensor এতে থাকছে। অর্থাৎ, Compass, Gyroscope প্রভৃতি সেন্সর মিস করবেন।  ফোনটিতে স্মার্ট কন্ট্রোল রয়েছে, যেমন, Smart Gesture, Smart Motion, Smart Action, Pocket Mode। এক হাতে ব্যবহারের জন্য থাকছে One Hand Mode । 

অভিমত

পার্সোনালি, এই ফোনটা আমার খুবই পছন্দ। স্বীকার করছি, সিম্ফনির প্রতি আমার কিছুটা দুর্বলতা আছে (পারিবারিকভাবে পুরাতন সিম্ফনি ইউজার কিনা!)। তবে আর ৫০০ টাকা বাড়িয়ে Realme C2 ও দেখা যেতে পারে। সেখানে বেশ ভালো Helio P22 চিপসেট রয়েছে, যদিও ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর মিসিং। তবে, মজার বিষয় হলো, Itel Vision 1 আরো ১,৫০০ টাকা কম দামে প্রায় একইরকম স্পেক অফার করছে। সে হিসেবে Vision 1 কিন্তু বেটার ভ্যালু ফর মানি।

Monday, April 6, 2020

Symphony Z50: ফ্লাগশিপ, গরিবের ফ্লাগশিপ নাকি এন্ট্রি লেভেল বাজেট ফোন?

Symphony Z50: ফ্লাগশিপ, গরিবের ফ্লাগশিপ নাকি এন্ট্রি লেভেল বাজেট ফোন?


আপনি গণনা কীভাবে করেন? 1, 2, 3, 4, 5, 6,… এভাবেই তো? সিম্ফনি কিন্তু এভাবে গুণে না। তারা গুণে, I, II, III, IV, V, VI, VII, VIII, 9, 10, 15, 20, 25, 12 এবং তারপর 50! মানে Symphony Z সিরিজের কথা বলছিলাম। তো, আমার মনে হয়, এভাবে নাম্বার স্কিপ করাটা Z সিরিজের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। ইভেন, Z30 বললেও পারতো, সরাসরি Z50 তে চলে গেলো।
তো যাই হোক, Symphony আনতে চলেছে তাদের নতুন স্মার্টফোন Symphony Z50। তারা এটাকে বলছে ‘FlagshipForAll’। কিন্তু আমরা জানি, ফ্লাগশিপ স্মার্টফোনগুলো বেশ দামী হয়, তাই সবাই কিনতে পারে না। তাই আমার মনে হয়েছে ‘FlagshipForAll’ কে সহজ বাংলায় গরিবের ফ্লাগশিপ বলা বেশ যুক্তিযুক্ত।
তো, যাইহোক, চলুন গবেষণা করা যাক, সিম্ফনির নতুন এই স্মার্টফোনটি কেমন হলো। আর এটাকে কি আসলেই ফ্লাগশিপ বলা যায়, নাকি এটা গরিবের ফ্লাগশিপ, নাকি শুধুই একটি এন্ট্রি লেভেল বাজেট ফোন?





ফ্লাগশিপ আসলে কী?

প্রচলিতভাবে, একটু দামী ফোন, যেখানে সময়ের সর্বোচ্চ কনফিগারেশন দেওয়া হয়, সেগুলোকে আমরা ফ্লাগশিপ ডিভাইস বলি। তবে এটা কোম্পানিভেদে ভিন্ন হয়। ফ্লাগশিপ বলতে মূলত কোন কোম্পানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রডাক্টটি বোঝায়, যা কোম্পানির প্রতিনিধিত্ব করে।
অ্যাপেলের $699 এ iPhone XR যেমন তাদের কাছে একটি বাজেট ফোন, তেমনি Symphony কোম্পানির জন্য নয় থেকে দশ হাজার টাকার ফোনও ফ্লাগশিপ হতে পারে। তো, এই বিবেচনায় আসলে, Symphony Z50 অবশ্যই তাদের ফ্লাগশিপ ডিভাইস।

Symphony Z50

সিম্ফনি তাদের ফেসবুক পেজে কয়েকদিন ধরে এটার বেশ প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা এটাকে যেভাবে ফ্লাগশিপ হিসেবে প্রচার করছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই এটার থেকে আশা অনেকটা বেশি ছিলো। হ্যাঁ, এটা সিম্ফনি ব্র্যান্ডের এখন পর্যন্ত আনা সেরা একটি ফোন। তবে, আমাকে সত্যি বলতে কিছুটা আপসেট করেছে।

ডিজাইন ও বিল্ড

ফোনটির ডিজাইনে আমি বেশি হতাশ… ফোনটির ডিজাইনে একটু নতুনত্ব, একটু প্রিমিয়াম ভাব আশা করেছিলাম। কিন্তু না। ফোনটি দেখে বেশ নিশ্চিতভাবে বোঝা যাচ্ছে, এটা প্লাস্টিক বিল্ড। ফোনটির তিনটি কালার আছে। Carribean Blue কালারটি সম্ভবত দারাজে এবং শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে। Aqua Blue এবং Blue-Purple কালারেরও উল্লেখ আছে দারাজে, তবে সেগুলো স্টকে দেখাচ্ছে না। হয়ত পরে আসবে। বাট, আমি যেটা বুঝলাম না, সিম্ফনির সিইও কি ব্লু খুব বেশি পছন্দ করে?

ডিসপ্লে

মন ভালো হয়ে যায় সামনের দিকে তাকালে। সামনে থাকছে একটি V শেপের নচওয়ালা ডিসপ্লে। নচ, চিন ও বেজেল বেশ মিনিমালিস্টিক। ডিসপ্লে হিসেবে থাকছে 6.5″ এর একটি বিশাল ডিসপ্লে। তবে মন আর ভালো থাকে না, যখন জানা যায়, এত বিশাল ডিসপ্লের রেজ্যুলেশন HD+ (এইটা কোন কথা?)। আর হ্যাঁ, এটি একটি 2.5D IPS প্যানেল, যেখানে Incell প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে শার্পনেস কিছুটা ভালো হওয়া সহ আরো কিছু সুবিধা রয়েছে। বাট, আফটার অল, এটা একটা HD+ রেজ্যুলেশনের IPS প্যানেল।

পারফরমেন্স ও স্টোরেজ

চিপসেট তো বুঝতেই পারছেন, এটা ফ্লাগশিপ ডিভাইস, অবশ্যই এখানে আছে SD865! মজা করলাম, বুঝতেই পারছেন, আদতে এটা গরিবের ফ্লাগশিপ। এখানে ব্যবহার করা হয়েছে MediaTek Helio P25 চিপসেট, সাথে GPU Mali T-880 MP2। এটি 16nm আর্কিটেকচারের একটি 2.6GHz এর OctaCore প্রসেসর, যার সবগুলো কোর ARM Cortex A-53।
তো এই চিপসেটটি কেমন? একদম খারাপ না, তবে P22 থেকে ওভারঅল কিছুটা পিছিয়ে থাকবে, যদিও কিছু দিকে এগিয়ে আছে। ফোনটার দাম হিসেবে আমার মেনে নিতে আপত্তি নেই। বিশেষ করে, ইতোপূর্বে সিম্ফনি তাদের কোন ফোনে 1.6 GHz OctaCore Unisoc SC9863a এর চেয়ে ভালো চিপসেট ব্যবহার করেছে বলে আমার জানা নেই। 1.3 GHz Quad Core চিপসেট দিয়ে বিখ্যাত একটি কোম্পানির কাছে এই চিপসেট পাওয়া সৌভাগ্যের বলব।
তবে এটা অনেক পুরনো চিপসেট, প্রায় বছর তিনেক আগের। তারপরেও, দামের দিকে তাকিয়ে এখানে অভিযোগ করছি না।
র‌্যাম থাকছে LPDDR4x সিরিজের 4GB র‌্যাম। ইন্টারনাল স্টোরেজ 64GB। সব মিলিয়ে ডে টু ডে ইউসেজে হার্ডকোর গেমাররা বাদে বাকিরা সন্তোষজনক পারফরমেন্সের আশা করতে পারেন।


ক্যামেরা

ক্যামেরার কথা যদি বলি, সিম্ফনির আরও অনেক সেটের মত এখানেও প্রাইমারি ক্যামেরা 13MP ও ফ্রন্ট ক্যামেরা 8MP। রেয়ারে আরো দুটি ক্যামেরা থাকছে, একটি 2MP টেলিফটো ও একটি 2MP ডেপথ সেন্সিং ক্যামেরা। টেকনিক্যাল ওমর চ্যানেলে ক্যামেরা স্যাম্পল যা দেখলাম, ভয়াবহ। তবে ক্যামেরা এবং ক্যামেরা অ্যাপের UI আপডেট করা হয়েছে বলেও একটি কমেন্ট দেখলাম। রিয়েল লাইফ এক্সপ্রেরিয়েন্স যেহেতু নেই, এর বেশি বলতে পারছি না।

সিক্যুরিটি

সিক্যুরিটি সেকশনে রেয়ার মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর পাওয়া যাবে। সফটওয়্যার বেজড ফেস আনলকও সম্ভবত, যদিও, এটা খুব কাজের মনে করি না।

ব্যাটারি

ব্যাটারির কথা কি ভুলে যাচ্ছিলাম? 4000 mAh এর ব্যাটারি থাকছে এখানে, যেটা বর্তমান সময়ে স্বাভাবিকভাবেই থাকার কথা। আরেকটু বেশি থাকলে কি আরেকটু ভালো হত? হ্যাঁ, তা তো হওয়ারই কথা!

সেন্সর

দারাজে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, Light, Gravity ও Proximity সেন্সর থাকছে এতে। মানে কী? এরকম একটা ফোনে Compass ও Gyroscope সেন্সর নাই? দুঃখজনক।

দাম

এবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, ফোনটির দাম। এর দাম ধরা হয়েছে ১০,৯৯০ টাকা। বাজারে এই দামে ৪-৬৪ ফোন কিন্তু খুব বেশি সম্ভবত নেই। সাথে আরো থাকছে একটা বিশাল ডিসপ্লে এবং ন্যারো চিন ও কিউট নচ। সব মিলিয়ে ওকে, বাট পসিবলি নট দা বেস্ট ইন বাজেট। Infinix Hot 8 সেম দামে বেটার কিছু অফার করছে, সে হিসেবে দাম কমানো প্রয়োজন ছিলো।

অভিমত

সিম্ফনির জন্য এটা অবশ্যই ফ্লাগশিপ, যদিও আদতে এটাকে একটা ভালোমানের এন্ট্রি লেভেল বাজেট ফোন বলা যায়। এটার দাম এখনো জানি না। যদি ১০,৯৯০ এর মধ্যে হয়, তাহলে এটাই সম্ভবত বেস্ট ইন বাজেট। তবে, দাম আরো বেশিও হতে পারে। কারণ বড় ডিসপ্লে, 4-64 র‌্যাম-রম, 2.6 GHz OctaCore প্রসেসর এখানে আছে।
তবে প্লাস্টিক বিল্ড, HD+ রেজ্যুলেশন, সেন্সরের অভাব ফোনটির ভ্যালু কমিয়ে দিচ্ছে, নয় কী? আবার ক্যামেরা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে (ক্যামেরা সেকশনে দেখুন)।
যারা এরকম বাজেটে ৪-৬৪ ডিভাইস খুঁজছেন, তাদের অবশ্যই পছন্দ তালিকায় রাখার মত। আবার ভিডিও এক্সপ্রেরিয়েন্স এর বড় ডিসপ্লে ও Incell প্রযুক্তি মিলিয়ে বেশ চমৎকার হবে আশা করা যায়। অন্যদিকে, প্লাস্টিক বডি, সেন্সরের কমতি এগুলো ফোনটিকে একটু পিছিয়ে দিচ্ছে। আবার বড় ডিসপ্লে অনেকে পছন্দ করেন না।
এই দামে Infinix Hot 8 5000 mAh ব্যাটারী, Helio P22 চিপসেট, Compass সেন্সর অতিরিক্ত অফার করছে। ডিসপ্লে, র‍্যাম-রম সহ বাকিসব স্পেকের দিক থেকে সেম। আরেকটু কম দামে Redmi 8A, Walton Primo RX7 Mini, আরেকটু বেশি দামে Realme 5i ফোনগুলোও কিন্তু বেশ ভালো। আপনার ঠিক কী প্রয়োজন তা বুঝেই কিন্তু আপনাকে নিজের ডিভাইসটি বেছে নিতে হবে।
সব মিলিয়ে আমার ফোনটি খুব খারাপ লাগেনি। তবে অবশ্যই উন্নতির অনেক জায়গা থেকে গিয়েছে।
realme C2: দামেই জাদু!

realme C2: দামেই জাদু!

৫৭% ভ্যাটের কারণে অফিসিয়াল ফোনগুলো বাংলাদেশে আসলে দাম বেশ চড়া হয়ে যায়। তবে, দেশে অ্যাসেম্বল করা ফোনের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে না, কেননা, তখন ভ্যাট প্রয়োজন হয় ১৮% এর মত। তাই বাংলাদেশী ব্র্যান্ডগুলোর পাশাপাশি বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোও এখন দেশে ফোন অ্যাসেম্বলে আগ্রহী হচ্ছে।
কিছুদিন আগে realme বাংলাদেশে অ্যাসেম্বল শুরু করে। দেশে অ্যাসেম্বল হওয়া তাদের প্রথম দুটি ফোনের একটি realme C2 (অপরটি 5i), যেটা প্রাইসিংয়ে চমকে দিয়েছে। মাত্র ৮,৯৯০ টাকায় তাদের এই স্মার্টফোনটি বাজারে এসেছে। তো, এই দামে কী কী পাচ্ছি দেখে নিই।
প্রথমেই ডিজাইনে আসি। আমার কাছে ডিজাইন সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, প্রথম ইমপ্রেসনের ওপর ভালোলাগার অনেকটা নির্ভর করে। আমরা যখন একটা মোবাইল দেখি, ডিজাইনই সবার প্রথমে আমাদের নজরে আসে।


তো, এই ফোনের 'ডায়ামন্ড-কাট' ডিজাইন পার্সোনালি আমার বেশ পছন্দ। সাধারণত অন্য ফোনগুলো শুধু গ্রাডিয়েন্ট কালার ডিজাইন করে এই দামের ফোনে। তার তুলনায় এটা বেশ সুন্দর। ক্যামেরা, লোগো প্লেসমেন্ট সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে। 
এখানে কোন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর নেই, পাওয়ার বাটনেও নেই কিংবা ডিসপ্লের নিচেও নেই। এই ফোনটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর সুবিধা থাকছে না। তার পরিবর্তে AI Face Unlock থাকছে, যেটা অবশ্যই ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের খুব ভালো বিকল্প না।
সামনের দিকে মিনিমাল চিন ও বেজেল এবং V-শেপ নচ নিয়ে দেখতে বেশ সুন্দর। ডিসপ্লে সেকশনে থাকছে 6.1" এর HD+ রেজ্যুলেশনের IPS ডিসপ্লে যা এরকম দামের ফোনে আমরা প্রায়সই দেখছি।
ফোনটির ব্যাটারী থাকছে 4000 mAh। তবে ওজন বেশ কম, মাত্র ১৬৬ গ্রাম। M-sensor, Light Sensor, Proximity Sensor, Gravity Sensor ও Acceleration Sensor থাকছে। তবে Compass Sensor ও Gyro Sensor এখানে নেই।
ক্যামেরা সেকশনে ব্যাক সাইডে থাকছে 13MP ও 2MP দুটি ক্যামেরা। Slo-Mo Video করা যাবে ফোনটি দিয়ে। ভিডিও করা যাবে সর্বোচ্চ 1080p 30fps। ফ্রন্ট ক্যামেরা 5MP। 
এর চিপসেট হিসেবে রয়েছে MediaTek Helio P22, যেটা এই দামে বেশ ভালো একটি চিপসেট। এর প্রসেসর একটি 2.0GHz OctaCore প্রসেসর। সাথে র‍্যাম থাকছে 2GB ও ইনবিল্ট স্টোরেজ 32GB।
ওভারঅল, ফোনটি এই দামে বেশ ভালো বলেই আমার মনে হয়েছে। আনঅফিসিয়ালের দামে অফিসিয়াল ফোন কিনা! তবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের অভাব কিন্তু মাথায় রাখতে হবে।
তথ্য ও ছবি সোর্স এবং বিস্তারিত: অফিসিয়াল ওয়েবপেজ
Walton Primo NH5: জানি না, এটা মানুষ কেন কিনবে?

Walton Primo NH5: জানি না, এটা মানুষ কেন কিনবে?

Walton Primo NH5 ওয়ালটনের একটি আপকামিং ফোন। কবে নাগাদ রিলিজ হবে জানা নেই। S7 Pro সহ চারটি ফোন তাদের আপকামিং থাকলেও কোনটিই মার্কেটে আনার নামই নেই। আর বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অনুমান করা যায় যে, খুব দ্রুত ফোনগুলো বাজারে আসছে না।
যাই হোক, এই ফোনটার দামসহ বিভিন্ন তথ্য তারা ইতোমধ্যেই তাদের ওয়েবসাইটে দিয়েছে। দাম প্রকাশের আগে আমার ধারণা ছিলো এটি ৪০০০-৫০০০ টাকার মধ্যে দাম রাখা হবে। কিন্তু তারা দাম দিয়েছে ৬,৫৯৯ টাকা! আমি সত্যিই জানি না, এই দাম দিয়ে কেন মানুষ এটা কিনতে যাবে, কেন?

নিতান্তই গরিব একটি ফোন। মাত্র ১ জিবি DDR3 র‍্যাম, ১৬ জিবি স্টোরেজ। 5.7″ HD+ ডিসপ্লে। কোন নচ ডিসপ্লে এটা না। চিপসেট সংক্রান্ত তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে ১ জিবি র‌্যামের সাথে যত ভালো চিপসেটই দিক, লাভ কী?
ব্যাকসাইডে দুটো ক্যামেরা থাকছে ঠিকই, তবে সেটার একটা 5MP, আরেকটি VGA ক্যামেরা। তো, দুটো ক্যামেরার সুবিধা কতটা পাবেন, সেটা বুঝে নিন। অন্যদিকে সামনে থাকছে একটি 5MP ক্যামেরা। ব্যাটারিও মাত্র 2500 mAh।
ভালো দিকের মধ্যে এখানে 4G সুবিধা থাকছে। আর ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর দেওয়া হয়েছে। বাট, ওভারঅল, এই দামে এটা কেনার কোন কারণ খুঁজে পাইনি। আর কয়েকশো টাকা বাড়ালেই পাওয়া যাবে Itel Vision 1। অথবা ১১০০ টাকা কমে Symphony i30 4G বাদে এর চেয়ে ভালো অফার করছে। তাই, এই দামে ফোনটি একদমই সাজেস্টেড না।
তবে যেহেতু এখনো রিলিজ হয়নি, এটা চূড়ান্ত দাম কিনা জানি না। যদি ৫,০০০ টাকার মধ্যে ফোনটি আনা হয়, তাহলে বলবো ঠিক আছে।
তথ্য ও ছবি সোর্স এবং বিস্তারিত: অফসিয়াল ওয়েবপেজ
PinePhone: কীভাবে এই স্মার্টফোনটি একটি বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে পারে? UBPort এডিশন প্রি-অর্ডার চলছে।

PinePhone: কীভাবে এই স্মার্টফোনটি একটি বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে পারে? UBPort এডিশন প্রি-অর্ডার চলছে।

পাইনফোন (PinePhone) স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ২ গিগাবাইট র‍্যাম, ১৬ গিগাবাইট eMMC স্টোরেজ। চিপসেট হিসেবে রয়েছে Allwinner A64, যেখানে সিপিইউ 64-bit Quad-core 1.2 GHz ARM Cortex A-53 এবং জিপিইউ MALI-400। পেছনে 5MP এর একটিমাত্র ক্যামেরা এবং সামনে 2MP এর একটি ক্যামেরা। কী মনে হচ্ছে? আমি চার-পাঁচ হাজার টাকা দামের কোন ডিভাইসের কথা বলছি? নাহ, এই স্মার্টফোনটির মূল্য $149.99 বা প্রায় ১৩,০০০ টাকা সাথে ৫৭% ভ্যাট ধরলে ২০,০০০ ছাড়িয়ে যাবে।

কী? অবাক হচ্ছেন এরকম একটি ফোনের দাম কীভাবে এত বেশি হতে পারে? এবং তার সাথে আমি কিনা আরো বলছি এই ফোনটি পরিবর্তন আনতে পারে স্মার্টফোন জগতে! এরপর কিনা এই ফোনের পেছনে আধখাওয়া আপেলের লোগোও দেওয়া নেই, বরং দুই ক্যামেরার মাঝে একটি পাইনের ছবি আছে। দেখতে মনে হবে ৮ বছর আগের ডিজাইন, জাস্ট ম্যাট ব্লাক প্লাস্টিক বিল্ড।
আবার এমনও মনে করলে বিশাল ভুল হবে যে, আপেলের মত ২ জিবি র‍্যামেই সব পাঙ্খা চলবে এখানে। না, অন্তত এখনই এরকম কিছুর সম্ভাবনা নেই বরং হাজারটা সমস্যা আপনার নিত্যসঙ্গী হবে। বলতে গেলে ডে টু ডে ব্যবহারে আপনি এটা নিয়ে চলতেই পারবেন না!
তাহলে, কেন এর দাম এত বেশি? আর কী-ই বা বিশেষত্ব এর আছে? এর উত্তর হলো, এটা একদমই প্রথমদিকের একটি ওপেন সোর্স ফোন। কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসাকে একচ্ছত্রভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য সবকিছু সম্বন্ধে কনজ্যুমারদের অবগত করে না। এবং আপনার বিভিন্ন ডেটাও তারা সংগ্রহ করে, যা অনেক সময়ই আপনি জানতে পারেন না। এটি অ্যান্ড্রয়েড কিংবা আইফোনের জন্য প্রযোজ্য হলেও পাইনফোনে কিন্তু এমনটা নয়।
পাইনফোন একটি পিওর লিনাক্স ফোন। আপনি হয়ত বলবেন, অ্যান্ড্রয়েডও তো লিনাক্স। হ্যাঁ, এটা সত্য যে, অ্যান্ড্রয়েড লিনাক্স কার্নেলের একটি কাস্টমাইজড ভার্সন ব্যবহার করে। তবে, অ্যান্ড্রয়েড অবশ্যই পিওর লিনাক্স নয়। পাইনফোনে বেশ কিছু মোবাইল লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে। এর মধ্যে আছে, Ubuntu Touch, Plasma Mobile, postmarketOS সহ বেশ কিছু অপারেটিং সিস্টেমে এটি চালানো যাবে।
ফোনটি এখনো ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে। হার্ডওয়্যার যদিও মোটামুটি প্রস্তুত, তবে সফটওয়্যার অভিজ্ঞতা এখনই মোটেও ভালো হবে না। যদিও আপডেটের সাথে অনেক অভিজ্ঞতা ভালো হতে থাকবে আশা করা যায়। আরো আশা করা যায়, ফোনটিতে লাইফটাইম আপডেট পাওয়া যাবে (পিসির ওএস যেভাবে আপডেট হয়) অ্যান্ড্রয়েড যেখানে সাধারণত ২-৩ বছরের বেশি আপডেট পাওয়া যায় না, কিছু ফোনে তো একদমই আপডেট আসে না।
ফোনটির বিশেষ ফিচার হলো হার্ডওয়্যার কিল সুইচ। আপনি সরাসরি এর মাধ্যমে ওয়াইফাই, সেলুলার ডাটা, স্পিকার ও মাইক্রোফোন হার্ডওয়্যারই বন্ধ করে দিতে পারবেন, যারা নিরাপত্তা নিয়ে বেশি চিন্তিত, তাদের জন্য এটা উপযুক্ত। এই সুইচগুলো পেতে রিমুভেবল ব্যাকপার্টটি খুলতে হবে। ব্যাকপার্ট খুললে আপনি সুইচের পাশাপাশি একটি রিপ্লেসেবল ব্যাটারি পাবেন। ফোনটির ব্যাটারি অন্য একটি ২৭৫০-৩০০০ mAh এর ব্যাটারি দিয়ে রিপ্লেস করা যাবে। ব্যাটারি খুললে পাওয়া যাবে মাইক্রো সিম পোর্ট ও এসডি কার্ড স্লট। ফোনটিতে পুরো ২ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ বাড়ানোর সুযোগ আছে!
এই ফোনে আরো থাকছে টাইপ সি পোর্ট। আলাদা ৩.৫ মি.মি ইয়ারফোন জ্যাক পোর্টও এখানে থাকছে।
 এই ফোনটির BraveHeart এডিশন এর আগে আনা হয়েছিলো, যেটাকে বলা যেতে পারে একটি আলফা ভার্সন। তবে সেটিতে কোন সত্যিকারের ওএস যুক্ত ছিলো না, অর্থাৎ, ব্যবহারকারীকে পছন্দের ওএসটি নিজেই ডাউনলোড করে এসডি কার্ডের মাধ্যমে ইন্সটল করে নিতে হত।
তবে সম্প্রতি প্রি অর্ডারের জন্য এভেইলেবল হয়েছে UBPort এডিশন। এটি একটি কমিউনিটি এডিশন। এখানে UBPort বা Ubuntu Touch ওএস সংযুক্ত রয়েছে। এছাড়া UBPort লোগো থাকছে ফোনের ব্যাক সাইডে। ফোনটির প্রতি ইউনিটের জন্য ১০$ ডোনেশন দেওয়া হবে UBPort ডেভেলপারদের।
এই এডিশনটিতে ভয়েস কল, মেসেজিং, এলটিই, ব্লুটুথ এরকম সার্ভিসগুলো ঠিকমতই কাজ করবে আশা করা যায়। এছাড়া এখন প্রথমবারের মত ক্যামেরা অ্যাপ কাজ করতে শুরু করেছে (আগে অ্যাপ চালুই হত না) যদিও অবস্থা খুবই শোচনীয়, ব্যবহারযোগ্য নয়। তবে আপডেটের সাথে এটা দ্রুতই ঠিক হবে আশা করা যায়।
দাম বেশি হলে একটি খবর দিই, PinePhone এর অনুরূপ আরেকটি ওপেন সোর্স ফোন Librem 5, যার ডেভেলপমেন্ট এর কিছুদিন আগে শুরু হয়েছে এবং এখন মোটামুটি ডেভেলপমেন্ট একই পর্যায়ে আছে। এটি স্পেকে সামান্য এগিয়ে (৩/৩২, ১.৫ গিগাহার্জ কোয়াড কোর, ১৩+৮ ক্যামেরা)। তবে দাম রীতিমত চমকে দেওয়া ৭৯৯ ডলার এবং আমেরিকার জন্য মেড ইন আমেরিকা এডিশনের দাম মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া ২০০০ ডলার!
বুঝতেই পারছেন, নতুন ধরণের একটি ডিভাইস, যার জন্য ব্যাপক পরিমাণ রিসার্চ দরকার হচ্ছে, সে হিসেবে এর দাম বেশি তো নয়ই বরং অনেক অনেক কম।
তথ্য ও ছবি সোর্স এবং বিস্তারিত: https://store.pine64.org/?product=pinephone-community-edition-ubports-limited-edition-linux-smartphone